নিজস্ব প্রতিনিধি :
রাজশাহী মহানগরীর প্রাণ কেন্দ্র সিপাইপাড়ায় অবস্থিত রাজশাহী সদর হাসপাতাল। একসময় হাসপাতালটি ছিল রাজশাহী ও আশপাশের জেলার রোগীদের অন্যতম ভরসার জায়গা। কিন্তু শত বছরের পুরোনো ভবনে হাসপাতালটি বন্ধ ছিল। প্রায় দেড় যুগ ধরে বন্ধই পড়ে থাকে এ হাসপাতালটি। কিন্তু গত বছর জেলায় অতিরিক্ত করোনা রোগীর চাপে বন্ধ হাসপাতালটি ফের চালুর কথা ভাবা হয়। এতে ৬ কোটি টাকার বেশি খরচ করে হয় সংস্কারকাজ। সেই কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে। কাজ শেষ তবু ৯ মাস ধরে অব্যবহৃত পড়ে আছে হাসপাতালটি।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জনবলর অনুমোদন না হওয়ার কারণেই হাসপাতালটি এখনো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এটি চালু না হওয়ায় অতিরিক্ত রোগীর চাপ পড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। ১ হাজার ২০০ শয্যার রামেক হাসপাতালে প্রতিদিনই প্রায় আড়াই হাজার রোগী ভর্তি হচ্ছে। বহির্বিভাগেও সেবা নিচ্ছে প্রায় সাত হাজার রোগী। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘রাজশাহীর মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আমিও চাই সদর হাসপাতাল চালু হোক। শুনেছি প্রয়োজনীয় জনবল চেয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন সিভিল সার্জন। সব ঠিক হলে হয়তো চালু করা হবে।’ গত ১৫ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন। দ্রæতই হাসপাতালটি চালুর কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রীও।
উল্লেখ্য, রাজশাহী সদর হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০২ সালে। কিন্তু রামেক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর এটির গুরুত্ব কমে যায়। ২০০৪ সালে ডেন্টাল ছাড়া অন্য সব চিকিৎসা বন্ধ হয়ে পড়ে। নিচতলায় দেওয়া হয় রামেক হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিট। দোতলাটি ব্যবহৃত হয়ে আসছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হোস্টেল হিসেবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে থাকা মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিট সদর হাসপাতাল চালুর বিপক্ষে। তাদের অসহযোগিতার কারণেই হাসপাতালটি চালু হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে সদর হাসপাতালের নিচতলায় থাকা রামেক ডেন্টাল ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান হাসিবুল হাসানের কার্যালয়ে গেলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা ৬ কোটি টাকার বেশি কাজ করেছি। গত ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হয়েছে। সময়মতো হাসপাতালটি চালু করা না গেলে যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়ে যাবে।’
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মো. ফারুক বলেন, জনবলের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। জনবল পেলে অতি দ্রুত সদর হাসপাতালটি চালু করা হবে।