হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিবেদক o
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় পুকুর নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আর্জিনা বেগম নামে এক গৃহবধূকে মারধর করা হয়েছে। শুধু মারধরই নয় পুকুরে বিষ ঢেলে দিয়ে মাছ নিধনেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সন্তানের বিরুদ্ধে।গুরুতর আহত গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় গত ২০ ডিসেম্বর হাতীবান্ধা থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন আহত ওই গৃহবধূর স্বামী সফিকুল ইসলাম।
এর আগে ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলার কেতকীবাড়ি এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, সফিকুল ও তার ভাই সাইফুলের মধ্যে ওই পুকুরটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলে আসছে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার আপোষ-মীমাংসা করা হলেও সাইফুল ইসলাম তা মানতে নারাজ। আর তাই এ নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। বর্তমানে পুকুরটি সফিকুলের দখলে রয়েছে। আর সে অনেক বছর ধরে সেই পুকুরে মাছ চাষ করছেন। এমন অবস্থায় গত শুক্রবার দুপুরে সফিকুলের স্ত্রী আর্জিনা পুকুর পাড়ে নিজের চাষ করা ধুনিয়া পাতা তুলতে যায়। এ সময় সাইফুল, তার স্ত্রী জরিনা বেগম ও তার ছেলে রেজাউল গৃহবধূ আর্জিনার উপর হামলা করে এবং এলোপাথারি মারধর শুরু করে। এতে আর্জিনার মাথা ফেটে যায়। খবর পেয়ে আর্জিনার স্বামী গুরুতর অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করান।
আজ সোমবার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আহত গৃহবধূ আর্জিনা বেগম।
এ সময় তার সাথে কথা হলে সে জানান, আমি পুকুরে ধুনিয়া পাতা তুলতে গিয়েছিলাম এ সময় সাইফুল, তার স্ত্রী জরিনা বেগম ও তার ছেলে রেজাউল আমার উপর হামলা করে। এতে আমার মাথা ফেটে যায়। আমি আর কিছু বলতে পারি না। চোখ খুলে দেখি হাসপাতালে। কথা বলতে পারিনা। কথা বললেই খুব মাথা ব্যাথা করে। মনে হয় মরে যাবো।
এ বিষয়ে গৃহবধূর স্বামী সফিকুল ইসলাম বলেন, পুকুর নিয়ে স্থানীয় ভাবে অনেকবার আপোষ মীমাংসা করা হয়। কিন্তু সাইফুল তা মানে না। আর তাই এ নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। বর্তমানে পুকুরটি আমার দখলে। আর আমি প্রথম থেকে ওই পুকুরে মাছ চাষ করে আসছি। সাইফুল ও তার স্ত্রী সন্তান আমার স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে। ক্ষতস্থানে তিনটি সেলাই হয়েছে। আমরা হাসপাতালে থাকায় সাইফুল রাতের আধারে পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। তাই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফুল বলেন, আমরা পুকুরে বিষ দেই নাই। তাকে কোন মারধর করা হয়নি। আমার ছেলে শুধু তাকে একবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তারা নিজেরাই নিজের মাথা ফাটিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন,‘ অভিযোগ পাওয়া গেছে ; তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ’
বাংলার কথা/সিদরাতুল মোত্তাকিন/ ডিসেম্বর ২১ ,২০২০