নিউজ ডেস্ক :
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব হাবিবুর রহমান কালাইয়ের নিজস্ব জমিজমা নেই। তাই উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কাপাশিয়া গ্রামে মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে একটি ছোট ঘর তৈরি করে স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
জীবিকা নির্বাহ করতে তাই কনকনে শীত উপেক্ষা করে ঘর থেকে কাজের জন্য বের হতে হয় তাকে। শুধু হাবিবুর নয়, একই গ্রামের সগগুল মিয়া, শরাফৎ আলী কোম্পানি, সিদ্দিক মিয়াসহ সবার একই অবস্থা।
উপজেলার পশ্চিম কাপাশিয়া গ্রামের বোরো আবাদের মাঠে কাজ করার সময় দেখা হয় হাবিবুরসহ অন্যদের সঙ্গে। হিম শীতল ঠান্ডা পানি। সূর্য ঢাকা পড়েছে কুয়াশার চাদরে। বইছে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। এর মধ্যে বোরো ধানের চারা তুলছে রোপণের জন্য।
হাবিবুর রহমান জানান, তার একটা ছেলে আছে। খোঁজখবর নেয় না। বাড়ি-ভিটা নেই। ছোট মেয়ের জামাইয়ের বাড়িতে একটি ঘর তুলে স্ত্রী নিয়ে থাকেন। কনকনে ঠান্ডায় শরীর চলে না। তবুও জীবিকার তাগিদে কাজে বের হতে হয়। কাজ করে প্রতিদিন ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা মজুরি পান। এ দিয়েই জীবন কাটছে তার।
হাবিবুর বলেন, অনেক চেষ্টার পর একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড পেয়েছি। এ ভাতার টাকায় হয় না। গত বছর একটা কম্বল পেয়েছিলাম। এ বছর এখন পর্যন্ত কোনো শীতের কাপড় পাইনি।
সগগুল মিয়া বলেন, আমি কোনো ভাতার কার্ডও পাইনি। খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি। পেটের দায়ে মাঠে কাজ করে কোনোমতে দিন চালাচ্ছি।
যোগানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত আমরা কোনো শীতের কাপড় বিতরণ করিনি। তবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বিতরণের জন্য প্রতি ইউনিয়নে ৪৯০টি করে কম্বল এসেছে শুনেছি। বরাদ্দ পেলে দু-একদিনের মধ্যে বিতরণ করব।
গারো পাহাড়ের কোল ঘেঁষা উপজেলা শেরপুরের নালিতাবাড়ী। গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ছেই। মাঝে মধ্যে সূর্য উঁকি দিলেও নেই কোনো তাপ। এমন অবস্থায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষগুলো রয়েছেন দুর্বিষহ অবস্থায়।