নিউজ ডেস্ক :
রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল, বিভিন্ন মহল থেকে ওঠা এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিদেশি অর্থায়নে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। সে কারণে আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে একটা ফান্ড তৈরি করি। সেই ফান্ডের নামও আমি দিয়েছিলাম- বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড অর্থাৎ বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল। সেটার অর্থেই বন্দরে কাজ শুরু করি।
অনেক বাধা অতিক্রম করে এবং নিজস্ব অর্থায়নে পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাজ শুরু হয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা গেছে পায়রা বন্দরে, মানুষের খাদ্য কেনায়, সার কেনায়। অনেকেই বলে, রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়। তাদের বলতে চাই, এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরের বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, নিজেদের রির্জাভের টাকা ভবিষ্যতে আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি। বন্দরকে আমরা লোন দিয়েছি, খুব অল্প সুদে, ঘরের টাকা ঘরেই থাকবে, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা যাবে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।
পায়রা বন্দর করতেও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পয়রা বন্দর তৈরি করার বিষয়টি যখন বলি তখন অনেকেই বাধা দিয়েছে। বলেছে এখানে বন্দর হওয়া সম্ভব নয়। কারণ এখানে অনেক সিল্ট আছে। বিশেষ করে আমাদের রাবনাবাদ চ্যানেল, এখানে এত বেশি সিল্ট যে পলি অপসারণ করা বা পরিবহন যোগাযোগের এত বেশি সুযোগ করা যাবে না।
সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খানকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শাহজাহান খানকে বললাম, ভাই আমি এখানে একটা বন্দর করতে চাই। বললেন, আমরা করতে পারবো। নিজে গেলেন, দেখলেন। অনেক বাধা অতিক্রম করে ২০১৬ সালে অপারেশনাল কাজ শুরু করে দেই। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নিয়মিত কয়লাসহ অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ আসতে শুরু করে। পায়রা নামটা আমারই দেওয়া। এখানে আমরা কয়লাভিত্তিক একটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু করি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার পরিবহন দিয়ে বন্দরের কাজ শুরু হয়।
তিনি বলেন, আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি, এখানেও একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছিল। আমাদের উপরে একটা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেটা কিন্তু প্রমাণ করতে পারেনি।
তিনি বলেন, নদীতে ড্রেজিং করার বিষয়টি কেউ গ্রহণই করতে চাইতো না। আমি আমার বাবার কাছ থেকে ছোটবেলা শুনেছি, আমাদের দেশের নদীগুলো সব সময় ড্রেজিং করা দরকার। নৌ চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক যে অবস্থান, সেই অবস্থানকে কেন্দ্র করে এদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থান যে দ্রুত পরিবর্তন করা সম্ভব এটা জাতির পিতা সব সময় বলতেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। তখন আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করি।
ভবিষ্যতে ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহায়েল, নৌ-পরিবহন সচিব মোস্তফা কামাল।