নিজস্ব প্রতিনিধি :
রাজশাহীর একমাত্র নারী পত্রিকা বিক্রেতা দিল আফরোজ খুকি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। স্ট্রোক করায় তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
এদিকে, খুকির সেবার জন্য তার পাশে আপনজন কেউ নেই। একারণে তার প্রয়োজনীয় যতেœর জন্য বুধবার রাত ১১ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
খুকির সঙ্গে অনেক আগে থেকেই তার পরিবারের সদস্যদের দূরত্ব। পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তার আত্মীয়রা কেউ এগিয়ে আসেনি। যারা এসেছিলেন তারা তাকে অল্পসময় দেখে ফিরে গেছেন।
নিউরো মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক কফিল উদ্দিন বলেন, খুকির স্বাস্থ্যের অবস্থা অপরিবর্তিত আছে, কোনো উন্নতি হয়নি। গত তিনদিন ধরে একই রকম আছে। খুকির স্ট্রোকের চিকিৎসা চলছে। তাকে দেখভালের জন্য একজন সার্বক্ষণিক দক্ষ কাউকে দরকার। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। সেজন্য তাকে আইসিইউতে স্থানান্তরের সুপারিশ করেছি। কিন্তু আইসিইউ বেড খালি না থাকায় সেখানে তাকে রাখা যাচ্ছে না।
খুকির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কথা সংবাদপত্রে ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, রাজশাহী মহানগরীর ২৩ নং ওয়ার্ড টিকাপাড়া এলাকার মেয়ে ও বঙ্গবন্ধু কলেজের এইচ. এস. সি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাজশাহী জেলা ইউনিটের যুব সদস্য প্রেমা খাতুন দিনের বেলা তার দেখাশোনা করছেন। স্ট্রোকের রোগীর সেবার তার কোনো অভিজ্ঞতা নেই।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় খবরের কাগজ বিক্রির জন্য হাঁটছিলেন খুকি। হঠাৎ অসুস্থ মাটিতে ঢলে পড়েন তিনি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর স্পেশাল ব্রাঞ্চের কনস্টেবল মাফিকুর আলম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এর আড়ে সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের স্ত্রী ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেণী খুকিকে দেখতে যান। তিনি খুকির চিকিৎসার খোঁজ নেন এবং বেডের ব্যবস্থা করে দেন।
দিল আফরোজ খুকি রাজশাহী মহানগরীর একমাত্র নারী সংবাদপত্র বিক্রেতা। বয়স প্রায় ৬২ বছর। দিনভর পরিশ্রম করলেও অনেক কষ্টে জীবনযাপন করেন। আবার তার উপার্জিত অর্থ থেকে বিভিন্নজনকে সহায়তাও দেন খুকি।
২০২০ সালে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খুকির জীবন-সংগ্রামের বিষয়টি উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে খুকির পাশে দাঁড়ায় জেলা প্রশাসন। ২০২০ সালে শ্রেষ্ঠ জয়িতার পুরস্কারও পান তিনি।