শুক্রবার , ৬ জানুয়ারি ২০২৩ | ৮ই চৈত্র, ১৪২৯
  1. অর্থনীতি
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খুলনা বিভাগ
  4. খেলাধুলা
  5. চট্টগ্রাম বিভাগ
  6. জাতীয়
  7. ঢাকা বিভাগ
  8. প্রচ্ছদ
  9. ফিচার
  10. বরিশাল বিভাগ
  11. বিনোদন
  12. মতামত
  13. ময়মনসিংহ বিভাগ
  14. রংপুর বিভাগ
  15. রাজনীতি

রাজশাহীতে গরম কাপড়ের জন্য ছিন্নমুল মানুষদের হাহাকার

প্রতিবেদক
BanglarKotha-বাংলারকথা
জানুয়ারি ৬, ২০২৩ ১:০২ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি :

শৈত্যপ্রবাহের কবলে রাজশাহী অঞ্চল। দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষেরা কনকনে শীতে কাহিল। সপ্তাহ ধরে চলা শৈত্যে প্রবাহে গরম কাপড় না থাকায় প্রকৃতির নিকট অসহায় তারা। এ কনকনে শীতে মাঝেও রাজশাহী ষ্টশনের সামনে পাতলা কাপড় গায়ে দিয়ে পলিথিন বা বস্তা গায়ে দিয়ে রাত্রি যাপন করতে দেখা যেছে। এ হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে খোলা আকাশের নীচে রাত্রি যাপন ভাবতে অবাক লাগে।

বিশেষ করে সমাজের ছিন্নমুল ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। কনকনে শীতে শ্রমজীবী মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেনা। এ কারণে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে, তারা জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।

এছাড়া এসকল পরিবারের প্রবীণ ও শিশুরা অমানবিক জীবন যাপন করছে। পাতলা ছেঁড়াকাঁথা ও কম্বল জড়িয়ে তাঁরা প্রচন্ত শীতে রাত্রী পার করছে। এ কারণে শীতজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। কনকনে শীতে ছিন্নমুল ও শ্রমজীবি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করলেও শীতবস্ত্র নিয়ে তেমন কেউ এগিয়ে আসেনি বলে জানা গেছে।

নগরীর দুইএকটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তি উদ্যোগে কিছু এলাকায় শীতবস্ত্র কম্বল বিতরন করা হলেও সেটা পর্যাপ্ত নয়। তবে দেরিতে হলেও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন গত ৪ ও ৫ জানুয়ারী থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কর্পোরেশনে ওয়ার্ড গুলোতে শীতার্থদের মাঝে কম্বল বিতরন শুরু করেছেন।

নগরীর তুলনায় জেলার উপজেলা গুলোর প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষজন একেবারেই শীতে কাহিল। কাজ না থাকায় দুবেলা খাবার নাই, গরম কাপড় কেনা তাদের নাগালের বাইরে। শিশু বৃদ্ধ সবাই হাড়কাঁপানো ঠন্ডায় কাহিল।

রাজশাহী জেলার ২টি উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু শীতবস্ত্র কম্বল ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হলেও কোন স্থানীয় সংসদ সদস্য বা উপজেলা চেয়ারম্যানরা ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করেনি।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় রাজশাহী জেলার তানোর, মোহনপুর ও পবা উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে আদিবাসি মেয়েরা চুলোর আগুনে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।

তানোরের বেলী কর্মকার নামে এক নারী দীঘি পাড়ে বসবাসরত তিনি জানান এখানে ৩৫/৪০টি আদিবাসী কর্মকার সম্প্রদায়ের বসবাস। যারা সকলেই দিনমজুর। এখানকার বাড়ি ঘরের চেহারা দেখেই এখানকার মানুষের অবস্থা বিষয়ে সহজেই ধারণা পাওয়া যায়। কী অমানবিক মাবেতের জীবনযাপন করছে তারা।

৬০ বছর বয়সী ভারতি কর্মকার জানান, তার স্বামী নেই। একমাত্র মেয়েকে বিবাহ দিয়েছেন। দিন মজুরী করে পেট চালান তিনি। তীব্র শীতের কারণে ৩ দিন ধরে কাজে যেতে পারেননি। ঘরে খাবার না থাকায় পাশের বাড়ি হতে চাল ধার করে নিয়ে এসে চুলায় চড়িয়েছেন। ঘরে শীতবস্ত্র না থাকায় ছেঁড়া একটি কাঁথা গায়ে জড়িয়ে রাত পার করছেন। ছোট একটি টিনের ঘরে তিনি একাই বসবাস করেন।

সুশীল কর্মকার জানান, তাঁর একমাত্র ছেলে পাগল। কাজ করতে পারেন না। ছেলের বউ অন্যের বাড়িতে দিন মজুরীর কাজ করে যে আয় করেন তা দিয়েই ৬ সদস্যর পরিবার কোন রকমে চলে। শীতের কারণে ছেলের বউ কাজে যেতে না পারায় ঘরে খাবার নেই। সকালে আধা কেজি চালের খিচুড়ি রান্না করে ভাগ করে খেয়েছেন। দুপুর ও রাতের খাবার কি হবে বা আদৌ হবেই কিনা তা জানা নেই।

জীবণ ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অন্নের সংস্থান করতেই হিমশীম খেতে হয় বলে তীব্র শীত মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র ক্রয়ের সামর্থ্য তাদের নেই। বাধ্য হয়েই পাতলা কাঁথা আর কম্বল গায়ে জড়িয়ে রাত পার করতে হচ্ছে।

শুধু ভারতি আর সুশীলা কর্মকারই নয় এই তিনটি উপজেলার আদিবাসী পল্লীতে বসবাসরত সকল পরিবারের অবস্থা প্রায় একই। শৈত্য প্রবাহ জনিত তীব্র শীতে ছিন্নমুল ও শ্রমজীবি এই মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করলেও তাদের জন্য কেউ শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসেনি এবং কোন খোঁজ খবরও নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।

সর্বশেষ - প্রচ্ছদ