নিজস্ব প্রতিনিধি :
রাজশাহীর জেলার বাঘা পৌরসভার নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলটির জেলা কমিটির সদস্য ও স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) মেয়র প্রার্থী আক্কাছ আলীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে আওয়ামী ’লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী শাহিনুর রহমান পিন্টু (নৌকা)’র নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়ানোর অভিযোগ করা হয়েছে। আবার সরকার দলীয় প্রার্থী শাহিনুর রহমান পিন্টুর সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) মেয়র প্রার্থী আক্কাছ আলীর সমর্থকদের প্রচারনায় বাঁধা, হুমকি-ধামকি দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন নিজেরাই তাদের নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দিয়ে আক্কাছের লোকজনকে ফাঁসানো হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন স্বতন্ত্র এ মেয়র প্রার্থী।
আক্কাছ আলী বলেন, ‘পিন্টুর কোনো জনসমর্থন নাই। তিনি নিশ্চিত পরাজিত হবেন জেনে ভোটের মাঠে নানা অপকর্ম করে পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন। আমার লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। তারাই তাদের নৌকা প্রতীকের ছোট্ট একটা নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে। দুই-তিনটা চেয়ারও নাকি ভেঙেছে। এসবই করা হয়েছে আমার লোকজনকে মামলা দিয়ে ফাঁসানো এবং হয়রানির জন্য। যেন তারা নির্বাচনে প্রচারে এবং ভোট দিতে যেতে না পারে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি ঘটনাটির সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করছি।’ ’
এবিষয়ে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী শাহিনুর রহমান পিন্টু বলেন, শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতের আঁধারে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আক্কাছ আলীর লোকজন নারায়নপুর সড়কঘাট এলাকার আমার নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন বলে জানান শাহিনুর রহমান পিন্টু।
আক্কাছ আলীর অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন বিবেচনা করে সাধারন ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে বলে আমার বিশ্বাস।
অপরদিকে সরকার দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প পোড়ানোর বিষয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আক্কাছ আলী বলেন,আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকেও এবার দলীয় মনোনয়ন পাইনি। জনগণের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। ভোটারদের সমর্থন দেখে, সরকার দলের প্রার্থীর লোকজন আমার কর্মী-সমর্থকদের প্রচারনায় বাধা ও বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারও জেলা অফিসার বরবার অভিযোগ করেছি। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা থাকায় এর আগে সব কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটরিং এর দাবিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছি।
পৌর নির্বাচনে রির্টানিং অফিসার আবুল হোসেন বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে, এজন্য ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরপেক্ষতার বিষয় নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় মনিটরিং করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে অবগত হয়েছি। কেউ দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পিন্টু বাদি হয়ে সরকার দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও নির্বাচন অফিস থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনকে প্রচারনায় বাঁধা দেওয়ার বিষয়ে আরেকটি অভিযোগ আমার কাছে দিয়েছেন। সে বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বাঘা পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বদ্বিতা করছেন ৫ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু(নৌকা), জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক মেয়র আক্কাছ আলী (জগ), পৌর জামায়াতের আমির প্রভাষক সাইফুল ইসলাম (নারিকেল গাছ), পৌর বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন (কম্পিউটার) এবং ইসরাফিল বিশ্বাস (মোবাইল ফোন)। সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ১৩জন,৯টি সাধারন ওয়ার্ডে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।