বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিবেদক o
রাজশাহীর বাগমারায় বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অনৈতিক ভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সাময়িক ভাবে স্থগিত করা হয়েছে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব, বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি যুদ্ধকালীন কমান্ডার আলী খাজা এম এ মজিদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের লিখিত অভিযোগের ফলে এই কার্যক্রম সাময়িক ভাবে স্থগিত করেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৪ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম। এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই শুরুর পর থেকে যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি আলী খাজা এম এ মজিদের বাড়িতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। নতুন ভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার আশ্বাস দিয়ে অনেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠে। যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে টিকার জন্য অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ম নীতি বহির্ভূত ভাবে আলী খাজা এম এ মজিদের সাথে অর্থ লেনদেন করতে হচ্ছে।
টাকা না দিলে যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে তালিকা থেকে বাদ দেয়ারও হুমুকি দেয়া হয়েছে অনেককে। তাই বাধ্য হয়েছে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা অবৈধ ভাবে তার সাথে অর্থ লেনদেন করতে বাধ্য হয়েছেন। বিষয়টি অনেক মুক্তিযোদ্ধায় মেনে নিতে পারেন নি। এর আগে সভাপতির অনৈতিক আচারণের ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হককে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন তারা। অবশেষে যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। অভিযোগের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করে দেন কমিটির সদস্য সচিব, উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
আরো জানা গেছে, কয়েক বছর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করতে গেলে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আদালতে কার্যক্রম বন্ধের আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে মহামান্য বিজ্ঞা আদালত যাচাই-বাছাই বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বেশ কয়েক বছর পর আবার যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করলে কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে কার্যক্রম বন্ধে লিখিত আবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সেই আবেদনের ফলে পুনরায় বন্ধ হয়ে গেল যাচাই-বাছাই কার্যক্রম।
জানা গেছে ২০১৬ সাল থেকে অনলাইনে ৩২৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের জন্য আবেদন করেছেন। এছাড়াও সরাসরি অফিসের গিয়েও অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করেন।
এদিকে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন, যেহেতু যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়ম নীতি অমান্য করে লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে তাই তাকে বাদ দিয়ে অন্যকে এই দায়িত্ব দিয়ে আবারও শুরু করা হোক যাচাই-বাছাই কার্যক্রম।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদের বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম। নতুন কমিটির মাধ্যমে আগামীতে পুনরায় যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
বাংলার কথা/শামীম রেজা/ডিসেম্বর ২৪, ২০২০