নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিবেদক o
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের গণসংযোগ আর প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠছে আসন্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল পৌরসভা নির্বাচন। পৌরসভার রাস্তাঘাট, অলিগলি ও পাড়া-মহল্লা এখন মিছিল, শ্লোগানে মুখরিত। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে পুরো নাচোল পৌরসভা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বসতবাড়িতেও এখন আলোচনার বিষয় শুধু নির্বাচন। প্রার্থীরা ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন তাদের নির্বাচনী এলাকা। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বিদ্রোহী প্রার্থী অংশ নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী বর্তমান মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ঝালু ব্যাপক গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি সমানভাবে চালাচ্ছেন উঠান বৈঠক ও মাইকিং। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি মেয়র থাকাকালীন পৌরসভার ব্যাপক উন্নীত করেছি । পাড়ায় পাড়ায় রাস্তা ও ড্রেন হয়েছে। অসহায় লোকজন পেয়েছেন বিধবা ও বয়স্ক ভাতার কার্ড। দেয়া হয়েছে মাতৃত্বকালীন ভাতা। বিশেষ করে শহরের সড়কে রাতে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে। পৌরবাসী পেয়েছেন সুন্দর আধুনিক পৌর শহর।জলাবদ্ধতা কমেছে। নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার হচ্ছে। মেয়র হিসেবে করোনাকালীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছি। পৌরবাসীর ঘরে-ঘরে পৌঁছে দিয়েছি চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী। বর্তমানে পৌরসভায় ৩টি ডিপটিউবয়েল এর কাজ চলমান রয়েছে।এখন সিদ্ধান্ত নেবেন ভোটাররা কাকে মেয়র বানাবেন।
অন্যদিকে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থী মাসুউদা আফরোজ হক সুচিও গণসংযোগ করছেন। ভোট সুষ্ঠু হলে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী।
এছাড়াও নাচোল পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নাচোল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাবু চামচ প্রতীকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন,‘আমি নাচোল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে নাচোল পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আমার এলাকার মানুষ আমাকে ভালবেসে মেয়র প্রার্থী বানিয়েছে। ইনশাআল্লাহ,আমি আশাবাদী সবাই আমাকে ভালবেসে চামুচ প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে মেয়র হিসেবে বিজয়ী করবে। কারণ আমি এলাকার ভিতরে মা, বোনদের সাথে কথা বলে দেখেছি পূর্বেও জনপ্রতিনিধিগণ তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার কোনটাই বাস্তবায়িত হয়নি। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কোন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হয়নি। এজন্য তারা, উন্নয়নের স্বার্থে নতুন মুখ দেখতে চায়। আর আমি নির্বাচিত হতে পারলে তাদের আশা, তাদের স্বপ্ন পূরণ করব,ইনশাল্লাহ। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাব। আমি কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী হতে চাই।’
অন্যদিকে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে রেল ইঞ্জিন প্রতীকে জোরেশোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড.মাইনুল হকের জামাই আমানুল্লাহ আল মাসুদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২আসনের সাংসদ (বিএনপির) আলহাজ্ব আমিনুল ইসলামের অনুসারীরা রয়েছে আমানুল্লাহ আল মাসুদের সাথে। বিএপির তৃণমূলের নেতা কর্মীরা রেল ইঞ্জিন প্রতীকে প্রচারণায় সাড়া ফেলছে। আমানুল্লাহ আল মাসুদ এর আগের নির্বাচনে মেয়রপদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। আমানুল্লাহ আল মাসুদ জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
একইভাবে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলর ও মহিলা প্রার্থীরাও। সবাই নিজ নিজ প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে প্রথমবারের মতো নাচোল পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন এবং ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভায় ভোটার ১৫ হাজার ৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ২৪০ জন এবং মহিলা ৭ হাজার ৭৬৮ জন। ৯ টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র ১০টি।
বাংলার কথা/জোহরুল ইসলাম জোহির/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১