নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী :
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গভীর শোক আর বিনম্র শ্রদ্ধায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করছে নেতাকর্মীরা। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকে মহানগর আওয়ামী লীগএসব কর্মসূচি পালন করে।
গভীর শোক-শ্রদ্ধায় জেলহত্যা দিবস পালন উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নগরীর কুমারপাড়া মোড়ে মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের পাশে স্বাধীনতা চত্বরে অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়। এরপর জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সুযোগ্য পুত্র, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে সেখান থেকে একটি শোক র্যালী নগরীর বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ শেষে নগরীর কাদিরগঞ্জে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে অর্পণ করে পুষ্পস্তবক।
জেলহত্যা দিবসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে যে কলঙ্ক লেপন করা হয়েছিল বাঙালির ভাগ্য ললাটে, এরই ধারাবাহিকতায় পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বরের প্রথম প্রহরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে হত্যা করা হয়। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড আমাদের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহে আরেকটি কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছিল। এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমরা যে শুধু স্বজন হারিয়েছি তাই নয়, বরং বাংলাদেশ হারিয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নসারথি এবং বিশ্বস্ত সৈনিকদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্মৃতির পাতায় জেলহত্যা এক বেদনাবিধুর ঘটনা। আমার বাবা এ এইচ এম কামারুজ্জামান যেদিন শহীদ হলেন, আমি ও আমার ছোট ভাই স্বপন তখন কলকাতায় রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে লেখাপাড়া করছি। বাবার মৃতদেহটি দেখার কোনো সুযোগ আমরা পাইনি। বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এক অতন্ত্র সৈনিক। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ তার জীবনভাবনার মূল সোপান ছিল। সারাটা জীবন তিনি সেই আদর্শ ভাবনাকে অবিচল নিষ্ঠা এবং একাগ্র সাধনা দিয়ে পালন করে গেছেন। নিমগ্ন থেকেছেন সত্য ও নীতির পথে। বঙ্গবন্ধুর নিঃস্বার্থ সহযোদ্ধা হিসেবে আপস করেননি ১৫ আগস্টের হত্যাকারী খুনিচক্রের সঙ্গে। শুধু আমার বাবা নন, অন্য তিন জাতীয় নেতাও ছিলেন একই রকমের ইস্পাতসম মনোবলের অধিকারী। তাই জাতির এই সুর্য্যসন্তানদের হত্যাকারীদের বিচার এখন সময়ের দাবি।’
এরপর দুপুরে মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে গরীব-অসমায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। এসময় অন্যদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক মো: ডাবলু সরকার, সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেণী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, ডা: তবিবুর রহমান শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আসলাম সরকার, মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, দফতর সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম বুলবুল, উপ-দফতর সম্পাদক পঙ্কজ কুমার দে, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক রবিউল আলম রবি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক শ্যাম দত্ত প্রমুখ।