নিউজ ডেস্ক :
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আপদকালীন জরুরি সাড়াদান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার স্থাপন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সোমবার (৩১ অক্টোবর) গুলশান নগরভবনে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টারটির উদ্বোধন করেন।
ইমার্জেন্সি কমান্ড সেন্টার থেকে দুর্যোগকালীন সাড়াদান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এটি সারাবছর জুড়েই নিয়মিত সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার হিসেবে কার্যক্রম চালাবে। এই সেন্টার থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে জলাবদ্ধতার স্পট, ময়লার গাড়ি ও মশকনিধন কর্মীদের মুভমেন্ট ট্র্যাকিং এবং সবার ঢাকা অ্যাপ কমপ্লেইন, রেভেনিউ, খাল, ফুটপাত ও ফুটওভার ব্রিজের এসকেলেটর, এসটিএস, স্মার্ট স্ট্রিট লাইটসহ বিভিন্ন সেন্সর মনিটর করা হবে। নাগরিক সেবা সাধারণ মানুষের কাছে দ্রুততম সময়ে পৌঁছে দিতে এবং জনদুর্ভোগ কমাতে সেন্টারটি ভূমিকা রাখবে।
ইমার্জেন্সি সেন্টার উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন ডিজাস্টার্স রেসপন্স এক্সসারসাইজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে এ অংশগ্রহণকারী ৩১৪ সদস্যের একটি দল। এই দলে রয়েছেন ২৭টি দেশের সেনাবাহিনীর ৫৩জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধি। উদ্বোধনকালে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, নগরবাসী যেকোনো সমস্যায় ছবি তুলে লোকেশনসহ সবার ঢাকা অ্যাপের মাধ্যমে জানালে ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার থেকে দ্রুত সময়ে প্রতিকার পাওয়া যাবে।
মেয়র আরও বলেন, আমরা ক্রমাগতভাবে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই। ভূমিকম্প এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘন ঘন না হলেও জলাবদ্ধতা, মশার হটস্পট, ড্রেন, বর্জ্য, রাস্তা, পাবলিক টয়লেট, পার্ক, স্ট্রিট লাইট, এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছি। সিসি ক্যামেরা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে সবকিছু নেটওয়ার্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে পরিচালনা করবে ডিএনসিসি।
শহরের কোথাও বর্জ্য পড়ে থাকলে, স্ট্রিট লাইট বন্ধ থাকলে, মশার হটস্পট পাওয়া গেলে, পার্ক মাঠ ও পাবলিক টয়লেটে কোন সমস্যা থাকলে কমান্ড সেন্টারের মাধ্যমে চলে আসবে সব তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। কমান্ড সেন্টারে জনগণকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সবাই তথ্য দিয়ে, অভিযোগ জানিয়ে সহযোগিতা করলেই আমরা দ্রুত সেবা প্রদান করতে পারব। জনগণকে এটুকু দায়িত্ব নিতে হবে। ডিএনসিসির মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি জনগণ সম্পৃক্ত হলে নগরের সমস্যাগুলো সহজে সমাধান করা সম্ভব হবে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের (ইউআরপি) অধীনে ডিএনসিসির ২য় তলায় ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার (ইওসি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার মধ্যে নিম্নলিখিত হার্ডওয়্যার রয়েছে ভিডিও ওয়াল সিস্টেমের ৩ সেট, মোট ৫৪ পিসি স্ক্রিন, প্রতিটি ভিডাব্লিওএস এ ১৮ পিসি ৫৫ ইঞ্জি ওয়াল স্ক্রিন। প্রতিটি ওয়াল ৬ী৩ ম্যাট্রিক্স যার অর্থ ৫ স্ক্রিন প্রস্থ এবং ৩ স্ক্রিন উচ্চতা, প্রতিটি প্রাচীর প্রায় ২৪ ফুট চওড়া এবং ৭ ফুট উচ্চতা, ভিডাব্লিওএস-এর জন্য কন্ট্রোলার, ট্রান্সমিটার এবং রিসিভার, ওয়াল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, ইওসি প্রিমাইজ ভিডিও নজরদারি সুবিধা, ৩২ আইপি ক্যামেরা, নেটওয়ার্ক ভিডিও, রেকর্ডার, ভিডিও ডেটার স্টোরেজ, ভিডিও মনিটরিং স্টেশন, ভিডিও ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, ৭০ টেরাবাইট স্টোরেজ ক্ষমতাসহ স্টোরেজ এরিয়া নেটওয়ার্ক। ভবিষ্যৎ ৩ পিবি পর্যন্ত আপগ্রেডযোগ্য, সার্ভার, রাউটার, ফায়ারওয়াল এবং সুইচ, ইসিওতে ১০০ এমবিপিএস ইন্টারনেট সংযোগ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহা. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এস এম শরিফ-উল ইসলাম প্রমুখ।