নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর :
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দেশের একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সারকারখানা (জেএফসিএল) চারমাস ধরে বন্ধ রয়েছে। গ্যাস স্বল্পতা ও কারখানায় পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ।
এদিকে কারখানায় গ্যাস সরবরাহ ও উৎপাদন চালুর দাবিতে শনিবার (২২ অক্টোবর) সকালে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শ্রমিক-কর্মচারীরা।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২১ জুন কারখানায় গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় শাটডাউন (বন্ধ) হয়ে যায়। এতে শুধুমাত্র নাইট্রোজেন উৎপাদন চালু থাকলেও অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোং যমুনা সারকারখানা কর্তৃপক্ষকে কোনো নোটিশ বা অবগত না করেই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করায় এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। সার উৎপাদন বন্ধ থাকায় দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল হাজার হাজার শ্রমিক কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে কারখানায় গ্যাস সরবরাহ ও উৎপাদন চালুর দাবিতে শনিবার সকালে মানববন্ধন করেছে জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ)। কারখানা অভ্যন্তরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে একটি মিছিল ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন সিবিএ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান, কার্যকরী সভাপতি নাজমুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।
নেতারা জানান, গ্যাস সরবরাহ না থাকায় ইউরিয়া উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না, এতে চারমাস ধরে কারখানা অলস পড়ে আছে। এতে একদিকে মূল্যবান যন্ত্রাংশগুলো নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার শ্রমিক কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকার রেশনিং পদ্ধতিতে গ্যাস সরবরাহ করলে চিরতরে নষ্ট হওয়া থেকে কারখানা রক্ষা পাবে।
কারখানার প্ল্যান্ট ম্যানেজার (অ্যামোনিয়া) ও কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, কারখানা পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে ৪০ এমএম সিএফ গ্যাসের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু উৎপাদন ছাড়াই কারখানা স্বাভাবিকভাবে সচল রাখতে ৫.৩ ঘনমিটার গ্যাস প্রয়োজন। গ্যাসের চাপ ৫.২ ঘনমিটারে নেমে আসলে অ্যামোনিয়া স্টোরেজ ট্যাংক বরফ হয়ে যাবে। এতে ট্যাংক চিরতরে অকেজো হয়ে কারখানা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে কারখানার মহা-ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) আব্দুল হাকিম বলেন, সরকার গ্যাস সরবরাহ না করলে উৎপাদন চালু সম্ভব না। তবে কবে নাগাদ গ্যাস মিলবে তাও বলা যাচ্ছে না।