মোজাম্মেল হক, চারঘাট (রাজশাহী) o
রাজশাহীর চারঘাটের হাট-বাজারগুলোতে চাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বেড়েই চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যগুলোর দাম নিয়ন্ত্রনে এখনই পাইকারী ও খুচরা বাজারে মনিটরিং অভিযান চান সাধারণ ভোক্তারা।
চলতি মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পানি ও বর্ষা মৌসুমে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় উপজেলার অধিকাংশ সবজি উৎপাদন এলাকা ডুবে গেছে। ফলে দীর্ঘ সময় পানিবন্দি থাকায় অধিকাংশ জমিতে নির্দিষ্ট সময়ে চাষিরা সবজির চাষ করতে সক্ষম হননি। কিছু কিছু উচুঁ জমিতে চাষাবাদ করলেও সবজির উৎপাদন প্রয়োজনীয় চাহিদার তুলনায় অনেক কম হয়েছে। ফলে নির্ভর করতে হচ্ছে পাশ্ববর্তী উপজেলা ও জেলা শহরের সবজির সরবরাহের উপর। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম হওয়ায় ধাপে ধাপে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ প্রয়োজনীয় সবজির দাম। তবে সবচেয়ে মরিচ ও পেয়াজের ঝাঁজ ব্যপকহারে বেড়েছে।
সারদা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী বাবর আলী বলেন, সবজির মধ্যে আলুর দাম না বাড়লেও পেঁয়াজ, আদা ও রসুন, পটল, বেগুন, কাঁচামরিচ, করলাসহ বিভিন্ন সবজির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গত ৭ দিনে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা, কাঁচামরিচের দাম কেজিতে একশ’ টাকা এবং সবজির দাম প্রকারভেদে কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারী বাজারে সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেশি বলে দাবি করেন খুচরা এই বিক্রেতা।
চারঘাট বাজারের সবজি ব্যবসায়ী রিপন আলী ও নন্দনগাছি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আজাম্মেল বলেন, সবজির দাম বেশি হওয়া ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা কম।
সারদা বাজারের চাল ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনে মোটা চালে কেজি প্রতি প্রায় ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। ফলে একধারে পাইকারী বাজারে অল্প পরিমান কিনতে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার কারণ হিসাবে পাইকারী বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহের অভাব ও অতিরিক্ত পরিবহণ খরচ দায়ি বলে জানান।
এদিকে, প্রয়োজনীয় সবজির দাম বাড়ায় সারদা বাজারের ক্ষুদ্র পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী আওয়াল জানান, করোনার প্রকোপে ব্যবসা প্রায় বন্ধ। বিক্রি কমে যাওয়ায় আয়ের পরিমান দিন দিন কমছে। এমন অবস্থায় চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম দাম বাড়ায় চাহিদা অনুযায়ী কিনতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাই স্থানীয় প্রশাসনের উচিত এখনই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি সর্ম্পকে আমাদের কাছে কোন ক্রেতা বা ভুক্তভোগি কেউ এ পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে উপজেলার সব হাট-বাজারে মনিটরিং অভিযান চালানো হবে। কেউ অযৌক্তিক দাম বাড়ালে, তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলার কথা/সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০

