গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি :
যেদিকে চোখ যায় সেদিকে শুধু হলুদ আর হলুদ, আর এর মাঝে হারিয়ে যেতে, যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, এমবিবিএস ডাক্তার, প্রকৌশলী, কৃষিকর্মকর্তা, ব্যাংক কর্মকর্তা, শিক্ষক, ছাত্র, ছাত্রী, শিশু, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশা, বয়সীর মানুষ যেন প্রতিযোগিতামূকভাবে ছবি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করায় ব্যস্ত। রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চল, বরেন্দ্র অঞ্চল গোদাগাড়ীর কৃষকরা আগে শুধু ইরি-বোরো এক ফসলী আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে।


তারা বিগত দু, যুগ ধরে ইরি-বোরো, আমন, টমেটো করোলা. লাউ, পটল, শীম, ভূট্টা, তরমুজ আবাদের পাশাপাশি সরিষার আবাদেও ঝুঁকেছে। তাই এখন সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ঢাকা গোদাগাড়ীর বিস্তীর্ণ মাঠ। গোদাগাড়ীর বাসুদেবপুরের বিল চড়াইয়ের যে দিকেই তাকাই হলুদ ফুলে চোখ ঝলসে উঠে। ফুলের সাথে লক্ষ লক্ষ মৌমাছি গুঞ্জন কৃষককে মহিত করে তুলেছে। মৌমাছি সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত। মধু আরোহনকারীরা মধু আরহনে ব্যস্তসময় পার করছেন। শীতের শিশির ভেজা সকালে সরিষার ফুল ফল দুলছে তো দুলছে সে সাথে দুলছে কৃষকের মন। তাই তো তারা দিনের বেশী সময় সরিষার মাঠে সময় পার করছেন। এ বছর গোদাগাড়ীতে বাম্পার সরিষার ফলন আশা করছেন কৃষক। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন সুলতানা। তিনি আরও জানান, গোদাগাড়ী উপজেলায় এবছর ৭ হাজর ২শ ১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। বারি সরিষা-১৪ জাত ২ হাজার ৮শ ৪৫ হেক্টর, বারি সরিষা-১৫ জাত ২ হাজার ৬শ ৯০হেক্টর, বারি সরিষা-১৭ জাত ২শ ৩৫ হেক্টর, এছাড়া বিনা সরিষা সহ স্থানীয় কিছু জাত চাষ হয়েছে। এছাড়া প্রতি সরিষা জমি থেকে বাড়তি আয় করতে অনেক বেকার যুবক এবং কৃষকগণ মৌবাক্স স্থাপন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোদাগাড়ী সকল ধরনের কারিগরী সহযোগিতা করছে। অনেকে ছুটির দিনে দুরান্ত থেকে এসে ছবি তুলছেন, হলুদ সরিষা ফুলকে স্মরণীয় করে রাখছেন।

তিনি আরও জানান, এছাড়া প্রতি সরিষা জমি থেকে বাড়তি আয় করতে অনেক বেকার যুবক এবং কৃষকগণ মৌবাক্স স্থাপন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোদাগাড়ী সকল ধরনের কারিগরী সহযোগিতা করছে। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষি বান্ধব সরকার তৈল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় মোট ১ হাজার ৬শ ৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতি ইঞ্চি জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। বিলের পানি নেমে যাওয়ার পর পরই সরিষার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোদাগাড়ী আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।সব সময় কৃষকের পাশে থাকতে নিরন্তর ছুটে চলতে ভালোবাসি।


এবারও বাম্পার সরিষার ফলন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মতিয়র রহমান জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে একের অধিক ফসল ফলানোর জন্য নানাভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকের সাথে কাজ করছেন। যাতে কৃষকের কোন প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয়। আমি আশা করছি, প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে এবার বিল চড়াইসহ গোদাগাড়ী সরিষা, গম, পিয়াজের রসুনের বাম্পার ফলনের আশায় স্থানীয় কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।