শেখ মেহেদী হাসান, ঈশ্বরদী (পাবনা) ০
দ্বিতীয় ধাপে আগামীকাল শনিবার (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভা নির্বাচন। ১৯টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে। তাই ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট প্রদান নিশ্চিত এবং নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর পদক্ষেপ।
ভোটের মাঠে রাখা হচ্ছে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আটজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসহ স্ট্রাইকিং ফোর্সের ভ্রাম্যমান দল। কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য থাকছে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ গোয়েন্দা সদস্য মিলে আড়াই থেকে তিনশ’ নিরাপত্তাকর্মী। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ঈশ্বরদী পৌরসভা নির্বাচনের রির্টানিং অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিএম ইমরুল কায়েস ও ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রির্টানিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদী পৌরসভা নির্বাচনে এবার তিনজন মেয়রসহ কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ৪৭ জন প্রার্থী। মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামীলীগের ইছাহক আলী মালিথা, বিএনপি’র রফিকুল ইসলাম নয়ন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোঃ মাসুম।
কোনরূপ বাধা-বিপত্তি কিংবা হামলা ছাড়াই সুষ্ঠু পরিবেশের মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে ভোট গ্রহণের আগেই বৃহস্পতিবার রাতে প্রচার প্রচারণা শেষ করেছেন।
এদিকে, শুক্রবার বিকেল থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম স্ব-স্ব কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে আনসার ও পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, ঈশ্বরদী পৌরসভার ১৯টি ভোটকেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) ধরা হয়েছে। এর মধ্যে অধিক ঝুঁকিপুর্ন কেন্দ্র রয়েছে ৪টি।
পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মহিবুল ইসলাম খান নিজেই ভোটের মাঠে উপস্থিত থেকে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি তদারকি করবেন। ভোটের মাঠে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, আটজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ গোয়েন্দা পুলিশ, স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ প্রায় আড়াই থেকে তিনশ’ সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে থাকবে।
ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ নিরাপদ, মনোরম রেখে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে কঠোর ভূমিকা পালনের জন্য পাবনা পুলিশ সুপার সাঁড়া মাড়োয়ারি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র মতে, পৌরসভায় মোট ভোটার ৫৫ হাজার ৫৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৭ হাজার ২৪১ জন ও নারী ভোটার ২৮ হাজার ৩২৭ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৯টি। বুথের সংখ্যা ১৫২টি।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার পিএম ইমরুল কায়েস জানান, ঈশ্বরদী পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করা হবে। ভোটগ্রহণের যাবতীয় প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শেষ করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
ইউএনও আরো জানান, এবার ঈশ্বরদী পৌরসভার ভোট ব্যালট পেপারের মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে। তাই ভোট গ্রহণের দিন সকালে স্ব-স্ব কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার মাধ্যমে সিল, কালি ও ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বর্তমানে মেয়র রয়েছেন। বর্তমান সরকারের আমলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ভোটে পরপর দুইবার নির্বাচিত হন তিনি। তিনি প্রয়াত সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপির জামাই। কিন্তু মেয়র হিসেবে পৌরসভায় একক আধিপত্য বিস্তার, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ভূমিদস্যুতা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দলীয় সিনিয়র নেতাকর্মীদের সঙ্গে অশালিন আচরণ করার অভিযোগে দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্টিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে দল থেকে আবুল কালাম আজাদ মিন্টু দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন।
বাংলার কথা/জানুয়ারি ১৫, ২০২১