নাটোর প্রতিনিধি o
দীর্ঘ ১৮ বছর স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে নাটোরের বড়াইগ্রামের বহুল আলোচিত আ’লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ ও বাকীদের খালাস দিয়েছে আদালত।
আজ সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এই রায় ঘোষনা করেন। এ সময় দন্ডপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার বিচার কার্যক্রম চলা অবস্থায় অভিযুক্তদের মধ্যে ৪ জন মৃত্যুবরণ করেন।
আদালত ও মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ বড়াইগ্রামের বনপাড়া বাজারে বিএনপি জামায়াত জোটের ক্যাডাররা প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ধারাল অস্ত্রের আঘাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আয়নাল হককে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ মার্চ তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের পুত্রবধু নাজমা রহমান বাদী হয়ে ১৭ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বিচার কার্যক্রম চলা অবস্থায় অভিযুক্তদের মধ্যে প্রধান আসামী উপজেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল হকসহ ৪ জন মৃত্যুবরণ করেন। পরে মামলাটির তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন।
দীর্ঘ ১৮ বছর ১০জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে সোমবার আদালতের বিচারক অভিযুক্ত বড়াইগ্রাম উপজেলা যুবদলের তৎকালীন সহসভাপতি তোরাব আলী ও বনপাড়া শহর যুবদলের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন এবং বাকী অভিযুক্তদের খালাস প্রদান করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুইজন হলেন উপজেলার মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাহার উদ্দিন মোল্লার ছেলে তোরাব মোল্লা এবং পলান মোল্লার ছেলে শামীম মোল্লা। দন্ডপ্রাপ্ত দুই জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা ছাড়াও উভয়কে দশ হাজার এক টাকার অর্থদন্ড করা হয়। ৪জন অভিযুক্ত মৃত্যুবরণ করায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
বাদীপক্ষে পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট শাজাহান কবীর এবং আসামীপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের মোল্লা ও অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মন্টু মামলাটি পরিচালনা করেন।
আসামী পক্ষে জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু দাবি করেন, তারা ন্যায় বিচার পাননি। তারা দন্ডপ্রাপ্ত দুই জনের জন্য উচ্চ আদালতে যাবেন।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও নিহত ডা. আয়নাল হকের ছেলে বনপাড়া পৌর সভার মেয়র জাকির হোসেন জানান, তারা আদালতের কাছে তথ্য প্রমান প্রদান করে আশা করেছিলেন অভিযুক্ত সকলেই শাস্তি পাবে। কিন্তু তারপরেও আদালত যে রায় দিয়েছে তা তারা মেনে নিয়েছেন।
বাংলার কথা/নাজমুল হাসান/সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০

